আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কুড়িগ্রামে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকরা
- আপডেট সময় : ০৫:০১:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ রুহুল আমিন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।
কুড়িগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় বদলে যাচ্ছে কৃষির চিত্র। কার্তিক মাস মানেই আগের মতো অভাব-দারিদ্র্য নয়; বরং নতুন সম্ভাবনা ও ফসল বৈচিত্র্যের সময়। জেলার ১৬টি নদ-নদীর তীরবর্তী ৪৫০টিরও বেশি চর এবং দ্বীপচরে বন্যা-পরবর্তী সময়ে ধান, ভুট্টা, ডাল, বাদাম, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব চরাঞ্চলে আগাম আলু চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এখন যেন রীতিমতো প্রতিযোগিতা—কে আগে আলু লাগাবে, আর কে আগে বাজারে তুলতে পারবে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আগাম জাতের আলু রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই তোলা যায়। কিন্তু গত মৌসুমে বাজারে আলুর দাম কম থাকায় অতিরিক্ত স্টক পড়ে যায় কোল্ডস্টোরগুলোতে। এর ফলে বেশিরভাগ কৃষককে লোকসান গুনতে হয়। লোকসানের সেই ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় এবার অনেকেই ধার-দেনা ও ব্যাংক ঋণে আগাম আলু চাষে নেমেছেন। তবে গত বছরের তুলনায় চাষের পরিমাণ কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে।
জেলার ৯টি উপজেলার চরাঞ্চল ও প্রায় ১২টি ইউনিয়নে এবার আগাম আলুর চাষ হলেও কৃষকরা জানাচ্ছেন, জমি ভাড়া, শ্রমিক মজুরি, সার ও ডিজেলের উচ্চমূল্য চাষে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কোল্ডস্টোরে এখনো ৫০ হাজার টনের বেশি আলু মজুত থাকায় বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে, যা মূল্যকে আরও প্রভাবিত করতে পারে।
মাস্টারেরহাট গাছবাড়ি গ্রামের কৃষক আবু সাঈদ এবং ম-লেরহাট গ্রামের মুকুল মিয়া বলেন,
“গত বছর আমরা ১০ একর আগাম আলু চাষ করে কিছু লাভ পেয়েছিলাম। কিন্তু মৌসুমী আলু চাষে বড় লোকসান হয়েছে। তাই এই বছর ঋণ নিয়ে আবার আগাম আলুর আবাদ করছি। এবার যদি দাম না পাই তাহলে আমরা সত্যিই পথে বসে যাব।”
শ্রমিকরা জানান,
“চাষ কম হওয়ায় আমাদের কাজও কমে গেছে। খরচ বেশি—কাজের মজুরিও ঠিকমতো ওঠে না।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
“চলতি মৌসুমে জেলায় আলুর আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৯০০ হেক্টর কম। ইতোমধ্যে রাজারহাট ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের আলু রোপণ শুরু হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না হলে আগাম আলুর উৎপাদন ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি।”
